চার বছরের শিশুকেও মুক্তিযোদ্ধা করতে বলেছে আদালত: মন্ত্রী
Published
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় চার বছর বয়স ছিল এমন ব্যক্তিকেও মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
সোমবার সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের সময় যার বয়স ৪ বছর ছিল তাকেও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে আদালত আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, তাদের ২৩ বছরের এরিয়ার ভাতা দিতেও বলা হয়েছে। চার বছরের শিশুকে কী করে আমরা মুক্তিযোদ্ধা বানাবো?
“আদালতের এমন আদেশে আমরা বিব্রত হচ্ছি। আমরা কী করব, কোথায় যাব-সেই জায়গা পাচ্ছি না। তবে আমরা বাস্তবতাগুলো আদালতে বলেছি, সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি, এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারব।”
আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মন্ত্রী বলেন, “তালিকায় থাকা ব্যক্তিবর্গ প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা কি না, তা দেখে আদালত যদি আদেশ দেন তাহলে সংকট থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।”
অমুক্তিযোদ্ধাদের মুক্তিযোদ্ধা ভাতা নেওয়া লজ্জাজনক মন্তব্য করে তিনি বলেন, “নতুন করে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা যাচাই-বাছাই কালে অমুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রমাণিত হলে তখন আমরা তাদের ভাতা বন্ধ করে দেই।
“কিন্তু মহামান্য আদালত যাচাই-বাছাই স্থগিত করেছেন এবং ওই অমুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা দিতে নির্দেশ দিয়েছে, যার কারণে আমরা তাদের ভাতা দিতে বাধ্য হচ্ছি।”
আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মন্ত্রী বলেন, “কেউ প্রকৃত অর্থে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন কি না, আদালত যদি তা দেখে আদেশ দেন তাহলে আমরা এই সংকট থেকে মুক্তি পেতে পারি।”
এ সময় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী মন্ত্রীকে বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে উপস্থাপন করার পরামর্শ দেন।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মোজাম্মেল হক দাবি করেন, তিনি মন্ত্রী হওয়ার পর বীরাঙ্গনা, মুজিবনগর সরকারের কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্বাধীন বাংলাবেতার কেন্দ্রের শিল্পী ও কলাকৌশলী, বিদেশে যারা জনমত সৃষ্টি করেছেন এবং মেডিকেল কোরের সদস্য ছাড়া নতুন কাউকে মুক্তিযোদ্ধা করা হয়নি।
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকারের (১৯৯৬-২০০১) আমলে মুক্তিযোদ্ধা বলতে লাল বার্তায় যাদের নাম ছিল তাদেরকেই বলা হত। তবে দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য সেখানে কিছু ত্রুটি রয়ে গেছে। এরপর বিএনপি-জামাত যখন ক্ষমতায় আসে তখন সরকারি কর্মকর্তাদের দিয়ে কোনো ধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়াই নতুন করে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় ৩৩ হাজার জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। যাদের অধিকাংশই মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়নি।
“এখন এগুলো বাদ দিতে গিয়ে আমরা সমস্যায় পড়েছি। সরকারের বিরুদ্ধে ১১৬টি মামলা হয়েছে, যার কারণে সঠিক তালিকা তৈরি করতে পারছি না। এই অমুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা থেকে বাদ দিতে পারছি না।”
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আগামী তিন দিনের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। কোনো মুক্তিযোদ্ধা বাদ পড়লে তারা আবেদন করতে পারবেন। পরে তা যাচাই-বাছাই করে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
প্রশ্নোত্তরে পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, “মোবাইল ফোনে বার্তা আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে যে তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের রশ্মি ব্যবহৃত হয় তা পরিবেশ ও মানবস্বাস্থ্যে কতটুকু ক্ষতি করে সেই বিষয়ে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত কোনো গবেষণা আমাদের দেশে নেই। তবে আদালতের নির্দেশে পরমাণু শক্তি কমিশন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ বিষয়ে গবেষণা করছে।”
তিনি জানান, দেশে বনভূমির পরিমাণ প্রায় ২৬ হাজার বর্গকিলোমিটার। দেশের মোট আয়তনের প্রায় ১৭ দশমিক ৬২ শতাংশ বনভূমি রয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, বনভূমি বাড়ানোর সুযোগ সীমিত। তবে উপকূলীয় অঞ্চলে বঙ্গোপসাগর থেকে নতুন জেগে ওঠা ভূমিতে বনায়নের মাধ্যমে বনভূমি বাড়ানো হচ্ছে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৬–২০২০ মেয়াদে দেশের বৃক্ষাচ্ছাদিত ভূমির শতকরা হার ২০ ভাগে উন্নীত করার লক্ষ্যে বনায়ন ও বন সংরক্ষণ কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
সরকারি বনাঞ্চলে বনায়নের পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকা, জেগে চরভূমি ও সব ধরনের প্রান্তিক ভূমি বনায়নের আওতায় আনা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
প্রশ্নোত্তরে ভূমি মন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ জানান, গত ১০ বছরে বাংলাদেশের জলসীমায় ২৪টি চর জেগে উঠেছে। এসব চরে মোট ভূমির পরিমাণ ১ লাখ ২৫ হাজার ৩৬৯ একর।
তিনি বলেন, নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ঠেঙ্গার চরে (১৩ হাজার একর) রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অস্থায়ীভাবে পুনর্বাসনের কাজ চলছে। এছাড়া হাতিয়ার স্বর্ণ দীপটি (৬০ হাজার একর) সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
ধন্যবাদ…আপনার মূল্যবান মতামত প্রদানের জন্য।