রংপুরে হিন্দু বাড়িঘরে হামলায় ‘জামায়াত-শিবির’: পুলিশ - bd24news.live //]]>

Breaking

bd24news.live

যখন ই ঘটনা তখন ই খবর

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

রবিবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৭

রংপুরে হিন্দু বাড়িঘরে হামলায় ‘জামায়াত-শিবির’: পুলিশ

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা রংপুরে হিন্দু বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছে বলে দাবি পুলিশের।
রংপুরের এসপি মিজানুর রহমান শনিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের বলেন, “সামনে নির্বাচন। দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির জন্য জামাত-শিবির এ ঘটনা ঘটিয়েছে।”
নিজের বক্তব্যের প্রমাণ হিসেবে তিনি বলেন, “পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত এবং পরবর্তী পর্যায়ে গ্রেপ্তারদের অধিকাংশই জামায়াত-শিবিরের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মী।”
শুক্রবার ‘ধর্ম অবমাননার’ অভিযোগ তুলে রংপুরে হিন্দু বাড়িঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে কয়েক হাজার মানুষ। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হন।
এই হামলায় বিএনপির স্থানীয় নেতারা ছিলেন বলেও দাবি করেছেন কোতোয়ালি থানার ওসি বাবুল মিয়া।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, শুক্রবার হামলার আগে পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়েছিল। তারা দেখেছে কারা হামলা চালিয়েছে।
“হামলায় সদর উপজেলা ওলামা দলের আহ্বায়ক এনামুল হক মাজেদি, স্থানীয় বিএনপি নেতা মাসুদ রানা এবং শলেয়াশাহ জামে মসজিদের ইমাম সিরাজুল ইসলাম ও খলেয়া ইউনিয়ন জামায়াতের সদস্য মোস্তাইন বিল্লাহকে নেতৃত্ব দিতে দেখা গেছে।”
রাতে তাদের বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু পালিয়ে যাওয়ায় তাদের ধরা যায়নি বলে ওসি জানান।
যে যুবকের বিরুদ্ধে ফেইসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে হিন্দু বসতিতে হামলা চালানো হয়েছে সেই টিটু রায় গত ১০ বছর ধরে এলাকায় থাকেন না। লেখাপড়াও জানেন না তিনি।
“ফেইসবুকে তার দেওয়া ধর্ম অবমাননার স্ট্যাটাস খুঁজে পাওয়া যায়নি। এলাকায় বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে দিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটানো হয়েছে,” “ বলেন এসপি মিজানুর।
টিটুর মা জিতেন বালা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার ছেলে কোনোদিনও স্কুলে যায়নি। সে গ্রাম্য কবিরাজ। জীবিকার সন্ধানে দশ বছর আগে এলাকা ছাড়ে টিটু। তবে আমার সাথে যোগাযোগ রয়েছে তার।”
শনিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, যারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা করছে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
স্থানীয় লালচাঁদপুর গ্রামের মুদি দোকানি আলমগীর হোসেন এক হিন্দু যুবকের বিরুদ্ধে ফেইসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে গত ২৯ অক্টোবর থানায় মামলা করেন।
এরপর বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মধ্যে গত মঙ্গলবার ওই যুবককে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ হয়। তারপর তিন দিন বাদে আবার বিক্ষোভের পর হয় হামলা।
ওই এলাকার পাগলাপীর জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মাস্টার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, মঙ্গলবার দুপুরে পাগলাপীর এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশে কয়েকশ মানুষ ছিলেন। বিক্ষোভের পর ওই হিন্দু যুবককে গ্রেপ্তারের দাবিতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
পরে পুলিশ সুপারের কাছে গিয়ে ওই হিন্দু যুবককে গ্রেপ্তারের জন্য ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়। এরপরেও তিনি গ্রেপ্তার না হওয়ায় শুক্রবার দুপুরে আবার বিক্ষোভ মিছিল হয়।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে রংপুর সদরের খলেয়া ইউনিয়নের শলেয়াশাহ ও বালাবাড়ি গ্রাম এবং পাশের মমিনপুর গ্রামের ৮ থেকে ১০ হাজার লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। বাধা দিলে বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ও লাঠি ছুড়তে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ছররা গুলি ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।
সংঘর্ষের মধ্যেই হামলাকারীদের একদল গিয়ে ঠাকুরপাড়া গ্রামে কয়েকটি হিন্দু বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে।
আগুনে টিটু রায়ের তিনটি, সুধীর রায়ের ছয়টি, অমূল্য রায়, বিধান রায় ও কৌশল্য রায়ের দুটি করে ৬টি, কুলীন রায়, ক্ষিরোধ রায় ও দীনেশ রায়ের একটি করে তিনটি ঘর ভস্মীভূত হয়।
পুলিশের গুলিতে হাবিবুর রহমান (৩০) নামে একজন নিহত হন। এছাড়া হামলাকারীদের ছোড়া ইট ও লাঠির আঘাতে সাতজন পুলিশ সদস্য আহত হন।
এ ঘটনায় গঙ্গাচড়া থানার এসআই রেজাউল করিম ও কোতোয়ালি থানায় এসআই রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে দুটি করেছেন। এসব মামলায় দুই হাজারের বেশি লোককে আসামি করা হয়েছে।
কোতোয়ালি পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এ থানার মামলায় ইনামুল হক মাজেদি, মাসুদ রানা, সিরাজুল ইসলাম ও মোস্তাইন বিল্লাহকে প্রধান আসামি দেখানো হয়েছে।
এর আগে রাতে জেলা প্রশাসন তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এ পর্যন্ত ৫৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

ধন্যবাদ…আপনার মূল্যবান মতামত প্রদানের জন্য।

Post Top Ad